• ঢাকা, বাংলাদেশ শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৫:৪৩ পূর্বাহ্ন

রাজশাহীতে আগুন নেভানো গাড়ি আটকে যাচ্ছে তারে, কাজে আসছে না আধুনিক গাড়ি

রিপোর্টার নাম:
আপডেট মঙ্গলবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজশাহীতে গত কয়েক বছরে বহুতল ভবনের সংখ্যা বেড়েছে। শহরে সর্বোচ্চ ২২ তলা ভবন তৈরি হয়েছে একাধিক। এখানকার ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের আগুন নেভানোর ক্ষমতা ছিল মাত্র সাড়ে তিন তলা পর্যন্ত, যে কারণে বহুতল ভবনগুলোতে আগুন লাগলে ফায়ার সার্ভিসের জন্য তা নিয়ন্ত্রণে আনা ছিল কষ্টসাধ্য। এমন বাস্তবতায় চলতি বছরের জুনে ২৪ তলা উচ্চতার আগুন নেভাতে সক্ষম একটি ‘টার্ন টেবল লেডার’ (টিটিএল) গাড়ি সংযুক্ত করা হয় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের রাজশাহী সদরদপ্তরে, কিন্তু গাড়িটি নিয়ে কিছুটা বেকায়দায় পড়েছে ফায়ার সার্ভিস। কারণ রাজশাহীর রাস্তাগুলো এ গাড়ি চলাচলের উপযোগী নয়।

রাস্তার ওপরে ঝুলে থাকা তারগুলোতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে গাড়ি চলাচল। তারগুলো যে উচ্চতায় ঝুলছে, তাতে টিটিএল গাড়িটি ফায়ার সার্ভিস অফিস থেকে বের হতেই আটকে যাচ্ছে।

রাজশাহী ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, অত্যাধুনিক টিটিএল গাড়িটি রাজশাহীতে যুক্ত হয়েছে গত ১৫ জুন। ৬৮ মিটার উচ্চতায় আগুন নেভানোর সক্ষমতা থাকা গাড়িটি আসার পর থেকে পড়ে আছে ফায়ার সার্ভিস দপ্তরেই। এটি রাস্তায় বের হওয়ার ক্ষেত্রে প্রধান বাধা ডিশ লাইন ও ইন্টারনেটের তার। গাড়িটি চলাচল করতে ১৭ থেকে ২০ ফুট উচ্চতার ফাঁকা রাস্তা দরকার।

ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা জানান, রাস্তার ওপরের তার সরানোর জন্য রাজশাহী সিটি করপোরেশনকে চিঠি দেয়া হয়েছে, তবে এটি বাস্তবায়নে এখনও কোনো উদ্যোগ নিতে পারেনি সিটি করপোরেশন।

রাজশাহী রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড ডেভেলপার অ্যাসোসিয়েশন (রেডার) সভাপতি তৌফিকুর রহমান লাভলু বলেন, ‘আমরা বহুতল ভবন নির্মাণ করে থাকি। আমাদের বহুতল ভবনের আগুন নেভানোর ব্যবস্থা ও পানির ব্যবস্থার জন্য বারবার আমরা মিটিংয়ে বলেছি।

‘টিটিএল গাড়িটিই শুধু নয়, সব ধরনের আগুন নেভানোর ব্যবস্থা রাখতে বারবার বলেছি। আমরা তো শুধু বলতে পারি। আমাদের পক্ষ থেকে বারবার দাবি জানানো হয়েছে।’

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স রাজশাহী বিভাগীয় উপপরিচালক ওহিদুল ইসলাম বলেন, ‘টিটিএল গাড়িটি রাজশাহীতে আসার মধ্যে দিয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স রাজশাহী সদরদপ্তর ২৪ তলা পর্যন্ত আগুন নেভানোর সক্ষমতা অর্জন করেছে, কিন্তু এ ক্ষেত্রে দুটি সমস্যা রয়েছে, প্রথমত এখনও এখানকার অনেক রাস্তা সরু। এসব রাস্তায় গাড়ি প্রবেশ করা ও গাড়ি ঘোরানোর ক্ষেত্রে সমস্যা হয়। আবার অনেক রাস্তায় ডিশ লাইনের তার ও বৈদ্যুতিক তার খুবই নিচু অবস্থায় আছে, যার কারণে গাড়ি চলাচল বাধগ্রস্ত হয়।’

তিনি বলেন, ‘রাজশাহীতে গাড়িটি আসার পর থেকেই কোনো ব্যবহার হয়নি, তবে আমরা প্রশিক্ষণের জন্য এটি ব্যবহার করছি। এরই মধ্যে শহরে কিছু জায়গাতে আমরা গিয়েছি, তবে রাস্তার তারের বাধায় অনেক কষ্ট করে তার উঠিয়ে আমাদের যেতে হয়েছে।’

ওহিদুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আমরা রাজশাহী সিটি করপোরেশনে এ বিষয়ে চিঠি দিয়েছি। এই গাড়িতে যে সেন্সরগুলো আছে, এগুলো যদি কোনোটা নষ্ট হয়, তবে এ গাড়ি আর চলবে না। এ জন্য তার অপসরণ দরকার। এ ছাড়াও গাড়িটি রাখার জন্য আমাদের কোনো ছাউনি নেই। তাই আমরা বর্তমানে এটিকে বাইরে ঢেকে রাখছি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর-ইসলাম বলেন, ‘এটি আমাদের দপ্তরের কাজ না, এটি রাজস্ব শাখা দেখে।’

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আবু সালেহ নূর-ই-সাইদ বলেন, ‘আমরা বারবার তার সরানোর জন্য বলেছি। এ ছাড়াও নোটিশ দিয়েছি কর্তৃপক্ষকে। অভিযানও চালিয়েছি। তারের জন্য যে অগুন নেভানো যাচ্ছে না, এটি জানা ছিল না।

‘আমরা একদিকে তার সরালে তারা অন্যদিকে তার লাগায়। এখন তো মেয়র নেই। আগামী মাসে মেয়র দায়িত্ব নেবেন। তখন এ বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরিতে আরো নিউজ