• ঢাকা, বাংলাদেশ শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০১:১০ অপরাহ্ন

যুবলীগের সম্মেলন ঘিরে সেজেছে রাজশাহী

রিপোর্টার নাম:
আপডেট সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক

দীর্ঘ সাত বছর পর রাজশাহী জেলা ও মহানগর যুবলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে মঙ্গলবার। ত্রি-বার্ষিক এই সম্মেলন ঘিরে রাজশাহী নগরীজুড়ে সাজসাজ রব বিরাজ করছে। এদিকে যুবলীগের এই দুই ইউনিটের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য প্রতিযোগিতায় নেমেছেন অর্ধশত নেতা। সম্মেলনকে ঘিরে চাঙ্গা ভাব দেখা দিয়েছে নেতা কর্মীদের মধ্যে। নগরীজুড়ে ব্যাপক প্রচারনা চালাচ্ছেন পদ প্রত্যাশি ও তাদের অনুসারিরা। ব্যানার ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে নগরী।

সর্বশেষ ২০১৬ সালের ৫ মার্চ মহানগর যুবলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠত হয়। রাজশাহী জেলা যুবলীগের সর্বশেষ কমিটি হয়েছিল ২০১৬ সালের ১৫ মার্চ।

নতুন করে সম্মেলনের দিন ঘোষনার পর থেকেই চাঙাভাব বিরাজ করছে সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে। ইতোমধ্যেই পদ প্রত্যাশী ও তাদের পক্ষে দোয়া সমর্থন চেয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন অনেকেই। আবার নগরীতে দোয়া ও সমর্থন চেয়ে অনেকেই ব্যানার ও ফেস্টুন টাঙিয়েছেন। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে জায়গা পেতে শীর্ষ নেতাদের সমর্থন আদায়ে তৎপরতা চালাচ্ছেন। গত ফেব্রুয়ারী মাসে রাজশাহী জেলা ও মহানগর যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে পদ-প্রত্যাশীদের জীবন-বৃত্তান্ত নিয়েছে দলটি হাইকমান্ড। গত ১৮, ১৯ ও ২০ ফেব্রুয়ারী এই তিনদিন জীবন-বৃত্তান্ত জমা নেয়া হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মহানগর যুবলীগের দুই পদের জন্য ২৮ জন নেতা তাদের জীবন-বৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে সভাপতি পদে ১০ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ১৮ জন।

রাজশাহী জেলা যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য ২২ জন নেতা তাদের জীবন-বৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে সভাপতি পদে ৯ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ১৩ জন।

মহানগর যুবলীগের সভাপতি পদের জন্য যারা জীবন-বৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন এদের মধ্যে রয়েছেন, মহানগর যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তৌরিদ আল মাসুদ রনি, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও ১৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল মোমিন, নগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শফিকুজ্জামান শফিক, যুবলীগ নেতা মাহমুদ হাসান খান চৌধুরী ইতু, আশরাফুল আলম, মুখলেছুর রহমান মিলন, আমিনুর রহমান খান রুবেল, অ্যাডভোকেট কাওসার রহমান নাইজার, ইউসুফ আলী ও রবিউল ইসলাম রুবেল।

সাধারণ সম্পাদক পদে যারা জীবন-বৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন এদের মধ্যে রয়েছেন, নগর যুবলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নাহিদ আকতার নাহান, বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক রায়হানুর রহমান রয়েল, মনিরুজ্জামান খান মনির, মুকুল শেখ, অ্যাড. মাজেদুল আলম শিবলী, রেজাউর রহমান রাজীব, রমজান আলী জনি, জয়নাল আবেদীন, পিয়ারুল ইসলাম পাপ্পু, আরকান বাপ্পি, সুজন আলী শেখ, মোরসালিন হক রাবু, আশিকুর রহমান অদ্বিত, মামুনুর রশিদ মাহবুব, প্রভাত রয় মনা, প্রণব সরকার, জাহিদ হাসান ও ১৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর তৌহিদুল হক সুমন।

রাজশাহী জেলা যুবলীগের সভাপতি পদের জন্য যারা জীবন-বৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন এদের মধ্যে রয়েছেন, বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আলী আযম সেন্টু, মাহমুদ হাসান ফয়সাল সজল, মোজাহিদ হোসেন মানিক, আলমগীর মুর্শেদ রঞ্জু, আনোয়ার হোসেন, তাসিকুল ইসলাম, এমদাদুল হক, রেজাউন নবী আল মামুন, আরিফুল ইসলাম রাজা।

সাধারণ সম্পাদক পদে যারা জীবন-বৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন এদের মধ্যে রয়েছেন, মোবারক হোসেন মিলন, ওয়াসিন রেজা লিটন, সামাউন ইসলাম, রফিকুজ্জামান রফিক, কামরুল ইসলাম মিঠু, জৌলুস মাহমুদ জেম্স, মোকাদ্দেস আলী, মুক্তার হোসেন, মেরাজুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান, সেজানুর রহমান, ফয়সাল আহমেদ রুনু, মামুন আর রশিদ।

এদিকে, রাজশাহী মহানগর ও জেলা যুবলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন উপলক্ষে সোমবার সংবাদ সম্মেলন করেছে দলটি। সোমবার বেলা সাড়ে ১১ টায় রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে সংবাদ সন্মেলনের আয়োজন করে রাজশাহী মহানগর ও জেলা যুবলীগ। সংবাদ সন্মেলনে কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিশ্বাস মতিউর রহমান বলেন, সম্মেলনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মাঝে এখন ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা বিরাজ করছে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে অনেকে জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন। তাদের মধ্য থেকে একটি সুন্দর নেতৃত্ব গঠন করা হবে। ক্লিন ইমেজ, সাংগঠনিকভাবে দক্ষ, ত্যাগী, পরীক্ষিতরা মূল নেতৃত্বে আসবে। মঙ্গলবার নগরীর পাঠান পাড়া শিমুল তলা মোড়ে সকাল ১০ টায় সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন যুবলীগের চেয়ামর‌্যান শেখ ফজলে শামস পরশ।

নগর যুবলীগে আলোচনায় রনিনাহান

দীর্ঘ সাত বছর পর আজ মঙ্গলবার রাজশাহী মহানগর যুবলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই সম্মেলনের মাধ্যমে নগর যুবলীগের দুই দশকের নেতৃত্বের পরিবর্তন হতে যাচ্ছে। সম্মেলনে শীর্ষ পদ পেতে প্রার্থীরা নানারকম তদবির আর কৌশল অবলম্বন করছেন। আবার অনেক প্রার্থী ও সমর্থকদের মধ্যে ফেসবুকে চলছে পক্ষে-বিপক্ষে তুমুল প্রচারণা।

নেতাকর্মীরা বলছেন, তৃণমূলের কাছে জনপ্রিয় এবং আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের আশীর্বাদপুষ্ট এ রকম নেতারাই এবার যুবলীগের মূল নেতৃত্বে আসছেন। তবে লিটনের অনুসারী প্রার্থীদের মাইনাস করতে কোমর বেধে মাঠে নেমেছে বিরোধীপক্ষ হিসেবে পরিচিত একটি অংশ।

অংশটি এবার যুবলীগের সম্মেলনে লিটনের অনুসারীদের মূল নেতৃত্বে আসা ঠেকাতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ কারণে সম্মেলনের আগে চলছে কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি। মহানগর যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে তৌরিদ আল মাসুদ রনি ও নাহিদ আক্তার নাহানের নাম সবচেয়ে বেশি আলোচিত হচ্ছে। রনি বর্তমান কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং নাহান আগের কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক। রনি ও নাহানের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়ে অনেকে তাদের অতীত নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করছেন। অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন সময়ের নেতিবাচক ছবি ও ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। রনি ও নাহান বলছেন, কাউন্সিল সামনে রেখে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে ছবি ছড়ানো হচ্ছে। তবে এগুলো পুরোপুরি ফেক (ভুয়া)। উদ্দেশ্যমূলকভাবে এসব করা হচ্ছে। রনি ও নাহানকে রাসিক মেয়র লিটন সমর্থন করায় তাদের ঠেকাতে লিটনবিরোধীরা উঠেপড়ে লেগেছে। সভাপতি পদে আলোচনার শীর্ষে থাকা তৌরিদ আল মাসুদ রনির রাজনীতি শুরু মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মির্জা শাহেনশাহ আলী শোভার হাত ধরে ছাত্রলীগে। এরপর ১৯৯৮ সালে ১৫ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে এবং ২০০৪ সালে এ ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক হন। দায়িত্ব পালন করেছেন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও।

রনি বলেন, ‘ছাত্রলীগ থেকে যুবলীগে এসে আমি সংগঠনকে শক্তিশালী করতে রাতদিন কাজ করছি। এখন আমিই নাকি হাইব্রীড! এসব কথা যারা বলছেন, তারা কতটুকু রাজনৈতিক ধারণা রাখেন তা আমি জানি না। এগুলো আমার বিরুদ্ধে পরিকল্পিত অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র। আমি রাজনীতি করি, রাজনীতির পাশাপাশি ব্যবসা করা কোন অপরাধ নয়। সুযোগ পেলে আমি যুবলীগকে আরও শক্তিশালী করতে কাজ করে যাব।’

এদিকে সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচনায় থাকা নাহিদ আক্তার নাহান ছাত্রলীগ থেকে উঠে আসা নেতা। যুবলীগের ২০০৬ ও ২০১৬ সালে সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। তৃণমূলের নেতাকর্মীরা বলছেন, আওয়ামী লীগ যখন বিরোধীদলে ছিল, তখন নিজের নেতৃত্বের পরিচয় দিয়েছেন নাহান। তাই তাকেই যোগ্য প্রার্থী ধরা হচ্ছে। নাহান বলেন, আমি দীর্ঘদিন দরে কাজ করে যাচ্ছি। আমি সাধারণ সম্পাদক পদে কাজ করার সুযোগ পেলে দলকে আরো বেশি সক্রিয় করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরিতে আরো নিউজ