নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজশাহী মহানগরীতে চুরি করতে দেখে ফেলায় গৃহিণী খুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে আরএমপি’র বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশ। আসামি খুনের দায় স্বীকার করে বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামির নাম মো: ওমর ফারুক মৃদুল (২১)। সে রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানার হোসনিগঞ্জের মো: আফতার উদ্দিন মিরুর ছেলে।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, গত ১২ই মার্চ রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানার হোসনিগঞ্জের শেখ আব্দুল কাদের সকাল সাড়ে ৯টায় তার মাকে লাশ গলায় কাপড় প্যাঁচানো রক্তাক্ত অবস্থায় ঘরের মেঝেতে পরে থাকতে দেখে। এছাড়াও তিনি তার মায়ের শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের দাগ দেখতে পান। বিষয়টি আব্দুল কাদের তাৎক্ষণিক বোয়ালিয়া থানা পুলিশকে অবহিত করেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে লাশ উদ্ধার করে। আব্দুল কাদেরের উক্ত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বোয়ালিয়া থানায় একটি হত্যার মামলা রুজু হয়।
মামলা রুজু পরবর্তীতে আরএমপি’র উপ-পুলিশ কমিশনার (বোয়ালিয়া) সাইফউদ্দীন শাহীনের নির্দেশে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার নূরে আলমের তত্ত্বাবধানে সহকারী পুলিশ কমিশনার (বোয়ালিয়া) আরিফুল ইসলামের নেতৃত্বে বোয়ালিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ সোহরাওয়ার্দী হোসেন, এসআই আবু হায়দার ও তার টিম আসামি গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করেন।
পরবর্তীতে বোয়ালিয়া থানা পুলিশের ওই টিম ঘটনাস্থলের আশেপাশের সিসিটিভি ফুটেজ এবং আরএমপি’র সাইবার ক্রাইম ইউনিটের তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় হত্যার ঘটনার সঙ্গে জড়িত আসামিকে সনাক্ত করে। এরপর গত ৫ জুন ভোর ৪টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বরিশাল জেলার মুলাদী থানার চরকালেকা গ্রামে অভিযান পরিচালনা করে আসামি ওমর ফারুককে গ্রেপ্তার করে। আসামি’র দেওয়া তথ্যমতে হত্যার ঘটনায় ব্যবহৃত একটি পাইপ ও স্ক্রু ড্রাইভার উদ্ধার হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃত আসামি জানায়, আব্দুল কাদেরের বাড়ি ফাঁকা দেখে সে দেওয়াল টপকিয়ে ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে। এসময় কাদেরের মা চলে আসায় সে খাটের নিচে লুকিয়ে পরে। যখন কাদেরের মা ঘুমিয়ে পড়ে তখন সে আলমারি খোলার চেষ্টা করে। শব্দ পেয়ে কাদেরের মা জেগে উঠে পাইপ দিয়ে আসামি ফারুককে আঘাত করার চেষ্টা করে। ফারুক তখন কাদেরের মাকে ধাক্কা দেয়। কাদেররে মা খাটের সাথে ধাক্কা লেগে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। স্ক্রু ড্রাইভার দিয়ে আলমারি’র তালা ভেঙ্গে টাকা নিয়ে চলে যাওয়ার সময় কাদেরের মাকে তাকিয়ে থাকতে দেখে। তখন সে তার গলায় একটা কাপড় বেঁধে খুন করে চলে যায়।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করলে আসামি খুনের দায় স্বীকার করে বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।