নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার পাকড়ি ইউনিয়নের মুসরাপাড়া গ্রামে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত আরো ১জনের মৃত্যু হয়েছে। এনিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৪জনে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত সাতজন। নিহতরা হলেন, উপজেলার ভাটাপাড়া গ্রামের জিল্লুর রহমানের ছেলে ছোটন (৫০), বড়গাছী কামারপাড়ার মৃত আলিম উদ্দীনের ছেলে মেহের আলী (৬৫) ও তার ভাই নাইমুল (৬৮) এবং উপজেলার গোসিরা এলাকার আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে মনিরুল ইসলাম(৪৫)। এদের মধ্যে মনিরুল রামেক হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধিন অবস্থায় রাত ৯টার দিকে মারা যান। অন্য তিনজনকে দুপুরে হাসপাতালে নেয়ার পরই মৃত ঘোষণা করা হয়। আহতদের মধ্যে ইউনুস আলী (২২), মো. আমু (২২), মো. রায়হান (৩৫), সোলেমান আলী (৫০) ও রজব আলীকে (৩১) রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্বজনদের ভাষ্যমতে, দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা বিরোধপূর্ণ জমিতে ধান লাগাতে যান স্থানীয় সেলিম রেজা গ্রুপের লোকজন। এতে বাধা দেয় প্রতিপক্ষ আশিক চাঁদের গ্রুপ। কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ধারালো অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে দুই পক্ষ। এতে আহত হয় অন্তত ১০ জন। বেশিরভাগ আহতই সেলিম রেজা গ্রুপের।
এদিকে সংঘর্ষের পর হতাহতদের এক এক করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের নিয়ে আসা হলে তাদের পরিবার, স্বজন ও গ্রামের প্রতিবেশীর আসেন। এ সময় নিহতদের পরিবার ও স্বজনদের কান্নায় হাসপাতালের পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে।
রাজশাহীর গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম জানান, সোমবার সকাল ৯টার দিকে জমি নিয়ে পূর্ব বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের লোকজনের উপর হামলার ঘটনা ঘটে। এখানে জমি নিয়ে সেলিম রেজা ও আসিফ আলি চাঁদের লোকজনের মধ্যে বিরোধ ছিলো। সোমবার সকালে জমিতে সেলিমের লোকজন ধান লাগাতে গেলে আসিফ আলির লোকজন হামলা চালায়। এতে অন্তত ১০জন আহত হয়। তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক ৩জনকে মৃত ঘোষণা করেন। ওসি জানান, জমি নিয়ে বিরোধ ছিল আগে থেকেই। সকালে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সংঘর্ষ বাঁধে। এটি সেই অর্থে সংঘর্ষও নয়। যারা মারা গেছে তাদের বয়স দেখেন- তারা বয়োবৃদ্ধ। প্রতিপক্ষের লোকজন সংঘবদ্ধ হয়ে এই হামলা চালিয়েছে। তাই তারাই বেশি হতাহত হয়েছেন। ঘটনার পর পুলিশ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের ধরতে অভিযান শুরু করেছে। ঘটনাস্থল থেকে ২জনকে আটক করা হয়েছে। এছাড়া আহত অবস্থায় দুজনকে পুলিশ আটক করেছে। মরদেহের ময়নাতদন্ত করে পরিবারের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এঘটনায় নিহতের পরিবারের লোককজন থানায় এসেছেন। তারা মামলা দেয়ার প্রক্রিয়া করছেন।