নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার পাকড়ীতে জমিজমা নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় নিরিহ কৃষকদের হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।বুধবার বিকেলে রাজশাহী প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ঐহিত্যবাহি হাজী মানিক উল্লাহ ওয়াকফ ৩২৫ এর মোতয়ালি আশিকুল ইসলাম চাঁন এর বড় মেয়ে মোসাঃ সানজিদা আক্তার এ অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমার পিতা বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষের একজন সহকারি কোষাধ্যক্ষ। তিনি রংপুর বিভাগে গাইবান্ধা জেলায় চাকুরিরত আছেন। তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র মূলকভাবে হত্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। আপনারা অবগত আছেন কিছু দিন আগে ভূমিদস্যু চক্র আমাদের এই এষ্টেট ইসি নং-১৩২৫, হাজী মানিক উল্লাহ ১৯৩৪ সালের ১০ মার্চ তারিখে ৫৭৬ নং দলিলে সরকারি ভাবে ১৩৩ একর জমি ওয়াকফ্ করেন। হাজী মালিক উল্লাহ ওয়াকফ্ এষ্টেট এর মৌজা মারকান্দা জে এল নং-৮৫, খতিয়ান নং ২৮২, দাগ নং- ৪৭, জমির পরিমাণ ৪.৬০ একর।
তিনি আরও বলেন, হাজী মানিক উল্লাহ ওয়াকফ্ এষ্টেটের কোন জমি বিক্রয় হয় নাই কারণ যে জমির ওপর গন্ডগল হয়েছে সেই জমি রাজশাহী সদর রেজিষ্ট্রার অফিসে ৭২২৩ নং কোন দলিল রেজিস্ট্রি হয় নাই। সেটি সম্পূর্ণ জাল দলিল।এই এষ্টেট থেকে ১০০০ এর অধিক কৃষক পরিবার জীবন জীবিকা নির্ভর করে। এই ভূমিদস্যু চক্রের মূলহোতা হলেন এজাজুল হক মানু। তার ছোট ভাই তৌহিদ, ১২ হাটির মানিক, ইয়াজপুরের লাভলু, মনির, কটা, স্বপন, মিজানুর, আতাবুর এবং মঞ্জুর। এদের ইন্ধনে ভাড়া করা সন্ত্রাসি এষ্টেটের জমিতে কৃষকদের ওপর হামলা করে। এজাজুল হক মানু এবং তার ভাই তৌহিদের কথায় পুলিশের সহযোগিতায় দালালচক্রের গ্রুপ গভীর রাতে পাকড়ি ওয়াকফ এষ্টেটের বাড়িতে জিনিসপত্র ভাংচুর করে এবং মুশরাপাড়া গ্রামের জালাল মেম্বার ও তার আলাউদ্দিনের বাসায় গিয়ে ভাংচুর করে বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়।
তিনি দাবি করেন, তাদের অত্যাচারে সাধারণ কৃষক পরিবারের লোকজন ভয়ে আতঙ্কিত। আমি এই ঘটনার জন্য বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ তদন্তের দাবি জানাচ্ছি। কারণ এই হত্যাকে পুজি করে সাধারণ নিরীহ কৃষকদের হয়রানী করা হচ্ছে এবং তাদের সন্তানরা যারা আছেন তারা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করছেন, তাদেরকেও ছাড় দেয়নি তাদের উপর অত্যাচার ও তাদের নামে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, আশিকুল ইসলাম চাঁনের স্ত্রী মাহমুদা ইসলাম, বোন ডালিয়া।
এদিকে পুলিশ, হতাহত ব্যক্তিদের পরিবার ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত বছর পাকড়ি ইউনিয়নের ইয়াজপুর গ্রামে ১৪ বিঘা জমি কেনেন রাজশাহী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের কর্মচারী সেলিম রেজার খালাতো ভাই সোহেল রানা। এই জমি ওয়াক্ফ সূত্রে পাওয়ার দাবি করে আসছিলেন বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কর্মচারী আশিক চাঁদ। এ নিয়ে তাঁর সঙ্গে বিরোধ চলে আসছিল সেলিম রেজার। সোহেল রানা এ বছর জমির দখল নেওয়ার জন্য চাষ করেন। জমি তৈরি হওয়ার পর গত সোমবার সকালে শ্রমিক নিয়ে ধানের চারা রোপণ করতে যান তিনি। এ সময় বিবদমান দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। সংঘর্ষে মোট চারজন নিহত হয়। এ হামলায় রাজশাহী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের কর্মচারী সেলিম রেজা নেতৃত্ব দেন বলে স্থানীয়রা দাবি করেছেন।