• ঢাকা, বাংলাদেশ শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৭:০৩ অপরাহ্ন

এক কানে কম শুনছেন তাইজুল

রিপোর্টার নাম:
আপডেট বৃহস্পতিবার, ৯ নভেম্বর, ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজশাহীর কাটাখালী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু সামার ব্যক্তিগত কার্যালয়ে আটকে রেখে মারধরের ফলে কলেজছাত্র তাইজুল ইসলামের (২১) ডান কান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি এই কানে কম শুনছেন বলে জানিয়েছেন। তাইজুল এখন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তিনি রাজশাহী সরকারী সিটি কলেজের স্নাতক প্রথমবর্ষের ছাত্র।

গত সোমবার রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার ইউসুফপুর গ্রাম থেকে কলেজে যাচ্ছিলেন তাইজুল। এ সময় কাটাখালীর দেওয়ানপাড়া এলাকায় অটোরিকশা থেকে তাকে নামিয়ে নেওয়া হয়। আওয়ামী লীগ নেতা আবু সামা তার লোকজন দিয়ে এই কলেজছাত্রকে তার ব্যক্তিগত কার্যালয়ে নেন। সেখানে তাকে মারধর করা হয়। এক তরুণীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের অভিযোগ তুলে তাকে বিয়ে করার জন্য চাপ দেওয়া হয়। বিয়ে না করলে ৫ লাখ টাকা দেওয়ার জন্যও চাপ দেওয়া হয়।

বিষয়টি জানতে পেরে তাইজুলের বাবা আবদুল হালিম আবু সামার কার্যালয়ে গেলে তাকেও আটকে রাখা হয়। পরে হালিম রাজশাহী নগর পুলিশের (আরএমপি) মতিহার জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার একরামুল হককে ফোন করেন। পরে এই পুলিশ কর্মকর্তার ফোনে তাইজুলকে ছেড়ে দেন আবু সামা। সেদিন এভাবে আটকে রাখার কারণে সময়মতো পরীক্ষা দিতে পারেননি তাইজুল। শারীরীক নির্যাতনের পরেও তাইজুল পরীক্ষায় বসলেও অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে রামেক হাসপাতালের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করেন পরিবারের সদস্যরা। বৃহস্পতিবারও এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তাইজুল।

তিনি জানান, আবু সামার লোকজনের মারধরের কারণে তার মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যাথা রয়েছে। ডান কানে কম শুনতে পাচ্ছেন। এই কানের পর্দা ফেটে গেছে বলে চিকিৎসকেরা ধারণা করছেন। কয়েকদিন ওষুধ খেয়ে স্বাভাবিক না হলে অস্ত্রোপচার করতে হবে।

রামেক হাসপাতালের নাক, কান ও গলা বিভাগের চিকিৎসক সুব্রত ঘোষ বলেন, তাইজুল বলছেন যে কানে কম শুনছেন। চিকিৎসকদের কেউ কেউ বলছেন পর্দা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এটা পরীক্ষা ছাড়া বলা যাবে না।

এদিকে তাইজুলকে নির্যাতনের ঘটনায় তার বাবা আবদুল হালিম বুধবার রাতে আবু সামাসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে কাটাখালী থানায় একটি লিখিত এজাহার দিয়েছেন। তবে বৃহস্পতিবার বিকাল পর্যন্ত সেটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়নি। এজাহারে বলা হয়েছে, কার্যালয়ে আটকে রেখে আবু সামা তার কাছে থাকা পিস্তল ঠেকিয়ে ৫ লাখ টাকা দাবি করেছিলেন। তবে এখনও মামলা রেকর্ড না করায় সুবিচার পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তায় তাইজুলের পরিবার।

জানতে চাইলে কাটাখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুর রহমান বলেন, ‘থানায় একটা এজাহার পেয়েছি। সেটা প্রাথমিক তদন্তের জন্য একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক তদন্ত শেষে এ ব্যাপারে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

তাইজুলকে নির্যাতনের বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ নেতা আবু সামা বলেছেন, তাকে অটোরিকশা থেকে নামিয়ে আনা হয়নি। রাস্তার ওপরে তাইজুল এক তরুণীর সঙ্গে ঝামেলা করছিলেন। তাই সমাধানের জন্য অফিসে নেওয়া হয়। ৫ লাখ টাকা দাবির অভিযোগও সত্য নয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরিতে আরো নিউজ