• ঢাকা, বাংলাদেশ শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৪ পূর্বাহ্ন

হত্যা মামলায় আসামি করায় মিছিলে গুলি

রিপোর্টার নাম:
আপডেট বৃহস্পতিবার, ১৫ আগস্ট, ২০২৪

ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি
বিএনপি, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবকদলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ছাত্রদলকর্মী শরিফ হোসেন সচিন বিশ্বাস (২৫) হত্যা মামলা দায়ের করার প্রতিবাদে স্থানীয়দের বের করা মিছিলে হামলা চালিয়েছে প্রতিপক্ষ। এনিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, গুলি বর্ষণ ও মোটর সাইকেলে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।

বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পাবনা-পাকশী বগা মিয়া সড়কের ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুর কড়ইতলা মোড়ে এসব ঘটনা ঘটে।

মিছিল আসা স্বেচ্ছাসেবকদল কর্মী সজলের মাথায় পিস্তল দিয়ে আঘাতসহ রক্তাক্ত জখম করার অভিযোগও উঠেছে। এছাড়া হামলার শিকার হয়ে পালিয়ে যাওয়া মিছিলে আসা বিপুলের দুটি মোটর সাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে ভস্মিভুত করা হয়েছে।

একাধিক সূত্র জানায়, গত ৬ আগস্ট রাত পৌনে ১০টার দিকে উপজেলার পাকশী ইউনিয়নের রুপপুর জিগাতলা এলাকায় দুর্বৃত্তদের হামলায় উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তানভির হাসান সুমন গ্রুপের ছাত্রদলকর্মী শরিফ হোসেন সচিন বিশ্বাস নিহত হয়। এ ঘটনায় নিহতের মা শরিফা বেগম বাদি হয়ে ১৩জনের নাম উল্লেখসহ ৪/৫জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে। আসামির তালিকায় রয়েছে যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের নাম।

মামলার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার দুপুরে সাহাপুর ইউনিয়নবাসীর ব্যানারে নারী পুরুষ সমন্বিতভাবে রূপপুর জিগাতলা মোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে কড়ইতলা মোড়ে যাচ্ছিল। মিছিলটি রূপপুর গোরস্তান এলাকায় পৌঁছালে প্রতিপক্ষ মিছিলকে লক্ষ্য করে গুলি বর্ষণ করে। হামলাকারীরা দুটি মোটর সাইকেলে অগ্নিসংযোগসহ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে কর্মরত শ্রমিকদের বহনকৃত অটোরিক্সা ভাংচুর করে। খবর পেয়ে মিছিলকারীদের পক্ষের লোকজন সংঘবদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে গেলে ধাওয়া- পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় কড়ইতলা এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়ে।

সাহাপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকদলের সভাপতি রাসেল পারভেজ বলেন, গ্রুপিং রাজনীতির কারণে হাবিবুর রহমান হাবিবের পক্ষে উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সুমন তাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দিয়েছে। এর প্রতিবাদে এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল বের করলে তানভীর হাসান সুমনের নেতৃত্বে নবী, রাজন, রুমন ওরফে টুকাই রুমন, পাকা সজিব, রিগ্যান, স্বপন, বাপ্পি, রয়েল, সোহেলসহ আরো ২০/২৫জন পিস্তল, ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালায়। এসময় তারা মিছিলকে লক্ষ্য করে ১৫/২০ রাউন্ড গুলি করে। এতে মিছিলে আসা সজল ও বিপুলসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়। হামলাকারীরা মিছিলে আসা ব্যক্তিদের দুটি মোটর সাইকেল পুড়িয়ে দিয়েছে।

তবে নিজের নেতৃত্বে জনসাধারণের বিক্ষোভ মিছিলে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সুমন বলেন, হত্যা মামলার আসামিদের প্রকাশ্যে ঝাড়ু মিছিল করতে দেখে গ্রামবাসী তাদের উপর হামলা চালিয়েছে। আর মিছিলকারীরা পরে গ্রুপিংজনিত কারণে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর করেছে।

ঈশ্বরদী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব মেহেদী হাসান বলেন, রাজনৈতিক গ্রুপিংয়ের প্রতিহিংসা পরায়ন হয়ে স্বেচ্ছাসেবক ও যুবদলের নেতাকর্মীদের হত্যা মামলায় মিথ্যা আসামি করাটা খুবই নিন্দনীয় ও দুঃখজনক। আবার জনসাধারণের বের করা বিক্ষোভ মিছিলে হামলার ঘটনা আরও বেশি দুঃখজনক। উভয় ঘটনার বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একই সঙ্গে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি করছি।

ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, মিছিলে হামলার খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। থানায় লিখিত অভিযোগ করলে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

 

বাংলার কথা/শেখ মেহেদী হাসান/আগস্ট ১৫, ২০২৪


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরিতে আরো নিউজ