• ঢাকা, বাংলাদেশ শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৫১ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
রাজশাহীতে সাবেক এমপিকে বহনকারী প্রিজনভ্যানে হামলা পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির বইয়েও আসছে পরিবর্তন সংখ্যালঘুদের ‘টার্গেট’ করে সহিংসতার ঘটনায় ৮৮ মামলা, ৭০ জন গ্রেপ্তার নবজাতকের মরদেহ আটকিয়ে ২০ হাজার টাকা আদায়! চাঁপাইনবাবগঞ্জে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় বাবা-ছেলেসহ নিহত ৩ মধ্যরাতে হামলায় আ. লীগকে দায়ী করে যা বললেন হাসনাত শেখ হাসিনার বক্তব্য বাংলাদেশ পছন্দ করছে না : দিল্লিকে পররাষ্ট্র সচিবের বার্তা ভারতে ধর্ষণের অভিযোগে আওয়ামী লীগের ৪ নেতা গ্রেপ্তার ভিসা সেন্টার দিল্লি থেকে ঢাকায় আনার অনুরোধ প্রধান উপদেষ্টার সীমান্তহত্যার অসঙ্গতি নিয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে: পররাষ্ট্রসচিব

সাইফুলকে যেভাবে হত্যা করা হয়, ৭ জনকে শনাক্ত করেছে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থা

রিপোর্টার নাম:
আপডেট বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪

বাংলার কথা ডেস্ক

চট্টগ্রাম আদালত এলাকায় সরকারী কৌঁসুলি সাইফুল ইসলাম আলিফ খুনে জড়িত কয়েকজনকে চিহ্নিত করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ওই আইনজীবীকে ১০–১৫ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল আক্রমণ চালিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে। আক্রমণকারীদের মধ্যে সনাতন জাগরণ মঞ্চের নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের অনুসারী, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের কর্মী, ইসকন সমর্থক আইনজীবী ও ক্লার্কও রয়েছেন।

ভিডিও ফুটেজ, ছবি বিশ্লেষণ ও গোয়েন্দা সূত্রে এসব তথ্য মিলেছে। এর মধ্যে হত্যাকাণ্ডে জড়িত একজনকে বহিষ্কার করেছে চট্টগ্রামের বিজিসি ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটি।

ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ চট্টগ্রাম আদালত ভবনের প্রধান প্রবেশপথ দিয়ে বেরিয়ে সড়কের উল্টোপাশে সরকারি মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ের দিকে যাচ্ছেন। তিনিসহ আরও ১০–১২ জন আইনজীবীকে ধাওয়া দেয় সশস্ত্র দলটি। এ সময় সাইফুল পা পিছলে পড়ে গেলে ধারালো অস্ত্রধারী ১০–১৫ জনের একদল যুবক রঙ্গম কমিউনিটি সেন্টারের সামনে প্রথমে পিটায়। এরপর মাথা থেঁতলে দেওয়া হয়। পরে আরেক দল কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে।

ভিডিও ও ছবি বিশ্লেষণ করে হত্যার সঙ্গে জড়িত ৭ জনের পরিচয় বের করেছে একটি গোয়েন্দা সংস্থা। এর মধ্যে বিজিসি ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটির এলএলবি পড়ুয়া এক ছাত্রকে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

এ ছাড়া চট্টগ্রামের মেথর পট্টি এলাকার একজন, কোতোয়ালির হাজারীগলি এলাকার একজন, কোতোয়ালীর জলসা মার্কেট এলাকার একজন এবং বন্দরের নিমতলা এলাকার একজনকে চিহ্নিত করেছে গোয়েন্দা সংস্থা। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগ ও চট্টগ্রাম বাকলিয়া কলেজ ছাত্রলীগ নেতার নামও উঠে এসেছে। তাঁদের প্রত্যেকের পরিচয় শনাক্ত করেছে গোয়েন্দা সংস্থাটি। তাঁদের আসামি করে চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানায় মামলা করার প্রস্তুতি চলছে।

গোয়েন্দা সংস্থাটি বলছে, মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) সকালে সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মুক্তি দেওয়ার দাবিতে তাঁর অনুসারীরা চট্টগ্রাম আদালত ভবনে সংঘর্ষে জড়ানো এবং বিচারককে মারধর করার পরিকল্পনা নিয়েছিল। এক প্রভাবশালী ইসকন নেতা তাঁদের অর্থ দিয়ে সহায়তা করেন। চট্টগ্রামের হাজারীগলির কাটা পাহাড়ে তাঁর বাড়ি।

এ ছাড়া ইসকন সমর্থক আইনজীবী ও ক্লার্করাও আদালতে সংঘর্ষে জড়ান বলে গোয়েন্দা সংস্থাটি বলছে।

ভিডিও ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম আদালত ভবনের প্রধান প্রবেশপথ দিয়ে বেরিয়ে সড়কের উল্টোপাশে সরকারি মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ের দিকে যাচ্ছিলেন হত্যাকাণ্ডের শিকার আলিফসহ ১০–১২ জন আইনজীবী। তাঁদের ধাওয়া দেওয়া হয়। এসময় পা পিছলে পড়ে যান আলিফ। ভিডিওতে দেখা যায়, কমলা রঙের গেঞ্জি পরা একজন তাঁকে কোপাচ্ছেন। বাকিরা লাঠি, ইট দিয়ে আঘাত করছেন।

আইনজীবী সাইফুল চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সাইফুল ২০১৮ সালে জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য হওয়ার পর হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবেও নিবন্ধিত হন। সাইফুলের বাড়ি লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি এলাকায়।

চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, সাইফুল ইসলাম আলিফের পিঠে ও ঘাড়ে দুটি ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এ ছাড়া মাথায় ভারী বস্তুর আঘাতে খুলি ভেঙে গেছে। একটি পাও ভাঙা।

এর আগে সোমবার (২৫ নভেম্বর) রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। পরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করার পর মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে তাঁকে চট্টগ্রাম আদালতে মহানগর হাকিম ষষ্ঠ কাজী শরীফুল ইসলামের আদালতে তোলা হয়।

শুনানি শেষে দুপুর ১২টা ২০ মিনিটের দিকে চিন্ময় কৃষ্ণকে প্রিজনভ্যানে ওঠানো হয়। তবে তাঁর অনুসারীরা এ সময় বাধা দিলে প্রিজনভ্যানটি প্রায় তিন ঘণ্টা সেখানে আটকে থাকে। পরে পুলিশ তাদের সরিয়ে দিতে চাইলে বিকেল ৩টার দিকে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। তারা এ সময় আদালত এলাকার একটি মসজিদসহ বেশ কয়েকটি স্থাপনা ভাঙচুর করে। পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে ও লাঠিচার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে চিন্ময় কৃষ্ণকে চট্টগ্রাম কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

এ ঘটনায় চট্টগ্রাম পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার কাজী মো. তারেক আজিজ বলেন, এখন পর্যন্ত ৩০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যারা হত্যা ও সংঘর্ষের সঙ্গে জড়িত, তাঁদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে। মামলাটি হবে কোতোয়ালী থানায়।

সূত্র: আজকের পত্রিকা

বাংলার কথা/নভেম্বর ২৭, ২০২৪


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরিতে আরো নিউজ