নিজস্ব প্রতিবেদক
পৃথিবীতে কোন রাষ্ট্রপ্রধান বলতে পারেন, ‘সন্তান আপনার, লেখাপড়ার দায়িত্ব আমার’? সেটা একমাত্র শেখ হাসিনাই পারে বলে মন্তব্য করেছেন রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী আসাদুজ্জামান আসাদ। শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজশাহী নগরীর সিটি হাট সংলগ্ন জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে পবা উপজেলা যুব মহিলা লীগ আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আসাদ এসব কথা বলেন।
আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, পৃথিবীতে কোন রাষ্ট্রপ্রধান কি বলতে পারেন, ‘সন্তান আপনার, লেখাপড়ার দায়িত্ব আমার’? সেটা একমাত্র শেখ হাসিনাই পারে। প্রাইমারি-হাইস্কুলের ছেলে-মেয়েরা বছরের প্রথম দিনেই নতুন বই পায়। আমরা যখন প্রাইমারি-হাইস্কুলে পড়েছি, কেউ কোনো বই বিনামূল্যে পাবো ভাবতেও পারি নি। নতুন বই সবার কেনাও সম্ভব ছিল না। যারা একটু অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছল, তাদেরও নতুন বই পেতে মে-জুন মাস পর্যন্ত সময় লাগতো। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছেলে-মেয়েদের জন্য বিনামূল্যে বই দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন জানুয়ারি মাসের এক তারিখেই। ধনী-গরিব, আওয়ামী লীগ-বিএনপি সবার বাচ্চারাই কিন্তু সেই বই হাতে পাচ্ছে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নারী সমাজের জন্য অনেক কিছু করেছেন। আগে সন্তানের পরিচয় হতো পিতার নামে। এখন কি তাই হয়? এখন আগে মায়ের নামে, পরে পিতার নাম। সেই জায়গা থেকে নারীরা গর্বিত মানুষ। এর মাধ্যমে শেখ হাসিনা নারীদের সম্মানিত করেছেন।
আসাদ বলেন, এই বিজয় দিবস এমনি এমনি আসে নি। যারা যুদ্ধে গিয়েছিল তারা কেউ জীবনের মায়া নিয়ে যুদ্ধে যায় নি। ফিরে আসবে কি মৃত্যুবরণ করবে এটা মাথাতেই ছিল না। তারা জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছে, এই যুদ্ধ করতে গিয়ে ৩০ লক্ষ মানুষ জীবন দিয়েছে, ২ লক্ষ মা-বোন সম্ভ্রম হারা হয়েছে, কোটি কোটি বাড়ি-ঘর পুড়েছে। শুধু পোড়া মাটি নিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা নিজ নিজ এলাকায় ফিরে দেখলো, কারো মা নেই, কারো বাবা নেই, কারো ভাই নেই, কারো বোন নেই। এই শোকের মাঝেও বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধারাসহ সাধারণ মানুষ আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ফিরিয়ে দিয়ে স্বাধীনতার পূর্ণতা পেতে। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে গড়ে তোলার জন্য ১৩৭টি দেশের স্বীকৃতি আদায় করেন। জাতিসংঘের সদস্য পদ লাভ করেন।
আসাদ বলেন, বিএনপি-জামায়াত নেতারা হঠাৎ করে বলতে লাগলো, আওয়ামী লীগ ভারতের দালাল। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে ইসলাম থাকবে না, ভারত হয়ে যাবে। শেখ হাসিনাকে নিয়ে একের পর এক ষড়যন্ত্র চলছে। ২১ বার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে, বার বার কারাগারে নেওয়া হয়েছে, মিথ্যা মামলা দিয়ে জর্জরিত করা হয়েছে। করোনার সময় যখন কেউ কারো পাশে যাওয়ার সাহস পেত না। সন্তান মারা গেলে পিতা-মাতা কাছে যেতে পারে নি, পিতা-মাতা মারা গেলে সন্তান মাটি দিতে পারতো না। কোনো বাড়িতে করোনা রোগী পাওয়া গেলে সেখানে লাল পতাকা উড়িয়ে দিয়ে গোটা পাড়াকে সতর্ক করে দেওয়া হতো। এমনই ভীতিকর পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। কিন্তু শেখ হাসিনা নির্দেশ দিলেন, তোমরা যারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক, আমার কথা মতো চলো। যেখান থেকে পারো অক্সিজেন ব্যাংক তৈরি করো, দেশের মানুষকে বাঁচাতে হবে। আমরা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ভয়কে জয় করে মাস্ক বিতরণ করেছি। টিকা আসলো, বিএনপি নতুন করে ছড়াতে থাকলো এই টিকায় গোবর আছে, বানরের রক্ত আছে সহ নানা বাজে কথা। হঠাৎ করে বিএনপির নেতারা ঢাকার কথা বাদই দিলাম, রাজশাহীর মিনু ভাইসহ অনেকে রাতের আধারে হাসপাতালে গিয়ে করোনার টিকা দিতে লাগলো। অথচ সাধারণ মানুষকে টিকা না দিতে প্রতিনিয়ত বলতে থাকলো। এই একেকটা টিকার দাম সাড়ে ৪ হাজার টাকা। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যবস্থাপনায় এই টিকা কেউ এক ডোজ, দুই ডোজ, তিন ডোজ, আবার কেউ কেউ চার ডোজ বিনামূল্যে দিয়েছেন।
পবা উপজেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি হাসিনা খাতুনের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি নারগিস শেলী।
পবা উপজেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক খুশী খাতুনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে পবা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ইয়াসিন আলী, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আরজিয়া বেগম, হুজুরিপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা, জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) আলী আজম সেন্টু, জেলা যুব মহিলা লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক নুরিয়া খাতুন, পবা উপজেলা যুব মহিলা লীগের সহ-সভাপতি শিউলি আকতার, হরিপুর ইউনিয়ন যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজিরা খাতুন লুবা, ভায়ালক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন যুব মহিলা লীগের সভাপতি শিলা আকতার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।