নিজস্ব প্রতিবেদক
আয়-বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং তথ্য গোপন করার অভিযোগে রাজশাহীর এক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এই নেতার নাম আতিকুর রহমান কালু। তিনি রাজশাহী নগরীর বোয়ালিয়া (পূর্ব) আওয়ামী লীগের সভাপতি।
আতিকুর রহমান কালুর বিরুদ্ধে ১ কোটি ৫৩ লাখ ৬ হাজার ৫১৫ টাকার আয়-বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং ১ কোটি ৪৭ লাখ ৪ হাজার ৪২১ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করার অভিযোগ আনা হয়েছে। মঙ্গলবার রাজশাহীর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি করেন দুদকের রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক আমিনুল ইসলাম।
মামলার আসামি আতিকুর রহমান কালু রাজশাহীর একজন ঠিকাদার ও ব্যবসায়ী। প্রায় এক যুগ ধরে তার নেতৃত্বে কয়েকজন রাজশাহীর সিটিহাট ইজারা পেয়ে আসছেন। রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) প্রতিবছরই তাদের উত্তরের সবচেয়ে বড় পশুর হাটটি ইজারা দিয়ে আসছে।
দুদকের মামলা সূত্রে জানা গেছে, অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ পেয়ে দুদক আতিকুর রহমান কালুকে তার সম্পদ বিবরণী দাখিলের নির্দেশ দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৫ জানুয়ারি তিনি সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন। এতে তিনি নিজ নামে মোট ৯ কোটি ৬১ লাখ ৫০ হাজার ৯১৭ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ দেখান। কিন্তু অনুসন্ধানে গিয়ে দুদক দেখে, তার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ১১ কোটি ১৪ লাখ ৫৭ হাজার ৪৩২ টাকার। এখানে তিনি ১ কোটি ৫৩ লাখ ৬ হাজার ৫১৫ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন।
অপর দিকে আসামির আয়কর নথি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০০৯-১০ থেকে ২০২২-২৩ করবর্ষ পর্যন্ত পারিবারিক ব্যয় বাবদ ২ কোটি ৮৭ লাখ ২৮ হাজার ৯০১ টাকা খরচ করেছেন এবং ২ লাখ ৮৬ হাজার ৬৮০ টাকা ঋণ শোধ করেছেন। অর্থাৎ আরও ২ কোটি ৯০ লাখ ১৫ হাজার ৫৮১ টাকা ব্যয় করেছেন। ফলে তার মোট সম্পদের পরিমাণ গিয়ে দাঁড়ায় ১৪ কোটি ৪ লাখ ৭৩ হাজার ১৩ টাকা। এ ক্ষেত্রে তার আয়-বহির্ভূত সম্পদ পাওয়া যায় ১ কোটি ৪৭ লাখ ৪ হাজার ৪২১ টাকার। এ দুই অপরাধে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ নেতা আতিকুর রহমান কালু বলেন, ‘অনুসন্ধানের সময় আমি দুদককে সব ধরনের সহায়তা করেছি। তারা কীভাবে কী অভিযোগ পেয়েছে, আমি বলতে পারব না। তবে একটা নতুন সাততলা ভবন করেছি। সেটা এখনো আয়কর নথিতে দেখানো হয়নি। এবার সেটা দেখাব। তাহলে হয়তো দুদক যে অভিযোগ তুলেছে, সেটা থাকবে না।’