চিত্রনায়িকা পরীমনির পাঠানো ডির্ভোস লেটার পেয়েছেন চিত্রনায়ক শরিফুল ইসলাম রাজ। দাম্পত্য অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে পরীর এই সিদ্ধান্তকে সম্মান করছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
রাজ বলেছেন, ‘এখন পরী যে পদক্ষেপটা নিয়েছে, সেটার সঙ্গে আমি আন্তরিকভাবে একাত্মতা পোষণ করছি। আলহামদুলিল্লাহ কবুল বলছি।’
গত ১৮ সেপ্টেম্বর ডিভোর্স লেটার পাঠন পরীমনি। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর গণমাধ্যমে এ নিয়ে খবর প্রকাশ হয় ২০ সেপ্টেম্বর। এর পর শুক্রবার একটি গণমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া দেন রাজ।
রাজ আরও বলেছেন, ‘পরীমনি যা যা বলেছে, একদমই ঠিক। পুরোপুরি সত্য। সবকিছু আমি মেনে নিয়েছি। আলহামদুলিল্লাহ!’
তিনি বলেন, পরীর সিদ্ধান্তের সঙ্গে থাকতে চাই। আজ হোক বা কাল, সম্পর্কটা হয়তো টিকত না। বিয়ের কিছুদিন পরই আমাদের মধ্যে সমস্যা শুরু হয়।
নানা জটিলতায় জড়ানো ছিল রাজ আর পরীমনির সংসার, এই ভাঙে তো এই জোড়া লাগে! এরই মধ্যে কদিন ধরে গুঞ্জন ওঠে, ভেঙে গেছে তাদের সম্পর্ক! তবে শেষ পর্যন্ত জানা যায় রাজকে ডির্ভোাস লেটার পাঠিয়েছেন পরী।
রাজের সঙ্গে ডিভোর্সের কারণ হিসেবে পরীমনি জানিয়েছেন, মনের অমিল হওয়া, বনিবনা না হওয়া, খোঁজখবর না নেয়া ও মানসিক অশান্তির জন্য আর সংসার করবেন না।
এ ছাড়া রাজকে নিয়ে মঙ্গলবার রাতে একটি পোস্টও করেছিলেন পরী। এতে নায়কের প্রতি নানা বিষয়ে ক্ষোভ ঝেড়েছেন তিনি। তবে কিছুক্ষণ পরই সেই পোস্ট ডিলিট করে দেন তিনি।
রাজ ও পরীর সম্পর্কটা অনেক দিন ধরেই বৈরি পথে যাচ্ছিল। এই বিবাদের শুরুও বেশ আগে। এ দম্পতির সাংসারিক কলহও ফেসবুকে আসা নতুন কিছু নয়।
তবে সর্বশেষ অভিনেত্রী সুনেরাহ বিনতে কামালকে জড়িয়ে দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছে গত ২৯ মে রাতে। ওই রাতে অভিনেত্রী সুনেরাহ, নাফিজা তুষি ও তানজিন তিশার সঙ্গে রাজের কিছু ছবি এবং ভিডিও রাজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে আপলোড করা হয়।
এসব পোস্টে অসংলগ্ন ভাষায় কথা বলতে দেখা যায় সুনেরাহ ও তানজিন তিশাকে। কয়েকটি ছবিতে দেখা গেছে রাজ ও সুনেরাহকে ভিডিও কলে কথা বলতে। একটি ভিডিওতে লিফটের ভেতরে নাচছিলেন তানজিন তিশা। পরে অবশ্য রাজের অ্যাকাউন্টে সেসব ভিডিও বা ছবি আর পাওয়া যায়নি।
ছবি ও ভিডিও ফাঁস হওয়ার দায় রাজের স্ত্রী নায়িকা পরীমনিকে দিয়ে পরদিন রাতে একটি পোস্ট দেন সুনেরাহ। একই সঙ্গে তিনি দেন আইনি ব্যবস্থারও হুমকি। এর পর দিন গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন পরীমনি। সুনেরাহকে এর দায় দেন তিনি। পরে কথা বলেন রাজও। তার বক্তব্য, তিনি এগুলোর কিছুই জানেন না।
এরপর পরীমনি আবার গণমাধ্যমকে বলেন, রাজের সঙ্গে তার যোগাযোগ নেই বেশ কিছুদিন। সুনেরাহর সঙ্গেই থাকছে রাজ। তার ফোনও নাকি তার কাছেই। এসব ছবি ও ভিডিও সুনেরাহই ছড়িয়েছেন। এ নিয়ে একে অন্যকে দায় দিয়েছেন তারা।
আগেও রাজ-পরীর পারিবারিক দ্বন্দ্বের ব্যাপার সামনে এসেছিল, গত পহেলা জানুয়ারি ইংরেজি নতুন বছরের প্রথম প্রহরে ভোর ৫টার দিকে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে রাজের সঙ্গে আর সংসার করবেন না বলে ঘোষণা দেন পরীমনি। একই ঘোষণা দিয়েছিলেন রাজও।
এর দু-একদিন আগে থেকে চিত্রনায়িকা বিদ্যা সিনহা মিমকে রাজের সঙ্গে জড়িয়ে নানা পোস্ট দিচ্ছিলেন পরীমনি। তবে শেষ পর্যন্ত টিকে যায় এ দম্পতির সংসার।
২০২১ সালের ১৭ অক্টোবর বিয়ে করেন শরিফুল রাজ ও পরীমনি। দীর্ঘদিন গোপনেই ছিল তাদের বিয়ের খবর। চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি তাদের বিয়ের খবর প্রকাশ্যে আসে।
পরীমনির অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবরটিই প্রথমে জানা যায়, পরে জানা যায় তাদের বিয়ের খবর। রাজ-পরীর একমাত্র সন্তান শাহীম মুহাম্মদ রাজ্য। গত বছরের ১০ আগস্ট জন্ম হয় রাজ্যের।