• ঢাকা, বাংলাদেশ শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০৬ অপরাহ্ন

ঈশ্বরদীতে সাবেক এমপি গালিবসহ ৭১ নেতাকর্মীর নামে মামলা

রিপোর্টার নাম:
আপডেট শুক্রবার, ১৬ আগস্ট, ২০২৪

শেখ মেহেদী হাসান, ঈশ্বরদী (পাবনা)
পাবনার ঈশ্বদীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় মিছিলে গুলি বর্ষণ, হামলা চালিয়ে মারপিট ও গুলিবিদ্ধ করার ঘটনায় পাবনা-৪ (ঈশ্বদী-আটঘরিয়া) আসনের সাবেক এমপি গালিবুর রহমান শরীফকে প্রধান আাসামি করে আওয়ামী লীগের ৭১ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে অস্ত্র ও হত্যা চেষ্টা আইনে মামলা হয়েছে। তবে আসামির তালিকায় নাম নেই ঈশ্বরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পৌরসভার সাবেক মেয়র আবুল কালাম আজাদ মিন্টু, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহবায়ক মাসুদ রানাসহ সকল আন্দোলন সংগ্রামে সামনের সারিতে থাকা আওয়ামী লীগের অনেক প্রভাবশালী নেতার।

বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) রাতে ঈশ্বরদী পৌর শহরের শৈলপাড়ার মৃত আব্দুর রশিদের ছেলে গুলিবিদ্ধ মোঃ নজরুল ইসলাম (৪৪) বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আর ৮০ থেকে ৯০জনকে। ঈশ্বরদী থানায় মামলা নং-১০।

শুক্রবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ঈশ্বরদী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মনিরুল ইসলাম।

মামলায় অন্যান্য আসামিদের মধ্যে রয়েছে সাবেক এমপি গালিবুর রহমান শরীফের ছোট ভাই উপজেলা যুবলীগের সভাপতি শিরহান শরীফ তমাল, ঈশ্বরদী পৌরসভার মেয়র ইছাহাক আলী মালিথা, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এমদাদুলক রানা সরদার, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম খান, পৌরসভার প্যানেল মেয়র আবুল হাশেম, উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মকলেছুর রহমান মিন্টু, পৌরসভার কাউন্সিলর আব্দুল লতিফ মিন্টু, পৌর যুবলীগের সভাপতি আলাউদ্দিন বিপ্লব, পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি আবির হাসান শৈশব, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রকিবুল হাসান রনি, এমপি গালিবের বোনের ছেলে ইথার ও উচ্ছাস, হাবিবুল ইসলাম, স্বজন সরদারসহ ৭১ নেতাকর্মী।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার একদফা আন্দোলনের অংশ হিসেবে দেশের অন্যান্য এলাকার মতো গত ৪ আগষ্ট সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ঈশ্বরদীতেও ছাত্র-জনতা শহরের ২নং ওয়ার্ড পশ্চিম টেংরী কাচারীপাড়া আল-হেরা জামে মসজিদ মোড় পাকা রাস্তার উপর মামলার বাদি, তার বন্ধুরাসহ ছাত্র-জনতা জমায়েত হতে থাকে। এসময় সাবেক এমপি গালিবুর রহমান শরীফের নেতৃত্বে আসামিরা পিস্তল, বন্দুক, বোমা, রামদা, হাসুয়া, চাপাতি, ছুরি, হকিস্টিক, লোহার পাইপ নিয়ে তাদের উপর হামলা চালায়। আসামিদের নিক্ষেপ করা ককটেল ও গুলিতে বাদি ও তার বন্ধু রাসেদুল ইসলাম রিপন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়। হামলায় আরও অনেক ছাত্র-জনতা আহত হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ছাত্র-জনতার এক দফা আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের দিন থেকেই সাবেক এমপি গালিবুর রহমান শরীফ, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন জনপ্রতিনিধি ও দলীয় নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে চলে যায়। এ কারণে ৫ আগষ্ট বিকেল থেকে আওয়ামী লীগের কোন নেতাকর্মীর টিকিও দেখা যাচ্ছে না।

মামলার বাদি নজরুল ইসলাম বলেন, ঘটনার দিন গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন। কিছুটা সুস্থ হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। সাবেক এমপি গালিবুর রহমান শরীফ নিজে হুকুম দিয়ে ছাত্র-জনতার উপর ককটেল ও বোমা নিক্ষেপ এবং গুলি বর্ষণ করিয়েছেন। হামলা চালিয়ে পিটিয়ে অনেককে আহত করিয়েছেন। বিভিন্ন ব্যক্তির বাড়ি, জমি, পুকুর, ব্যবসা প্রতিষ্টানে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও দখল করেছেন। আমি তাদের দ্রুত গ্রেফতারসহ কঠোর শাস্তির দাবি করছি।

ঈশ্বরদী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মনিরুল ইসলাম বলেন, মামলায় পাবনা-৪ আসনের সাবেক এমপি গালিবুর রহমান শরীফকে প্রধান আসামি করে ৭১ জনের নামে বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ৮০ থেকে ৯০জনকে আসামি করা হয়েছে। শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকেই আসামিরাও সবাই আত্মগোপন করেছে। আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

 

বাংলার কথা/শেখ মেহেদী হাসান/আগস্ট ১৬, ২০২৪


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরিতে আরো নিউজ