• ঢাকা, বাংলাদেশ শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:১৭ পূর্বাহ্ন

আমার ছেলে যেন এমনই সাধারণ থাকে: উপদেষ্টা আসিফের বাবা

রিপোর্টার নাম:
আপডেট শুক্রবার, ৯ আগস্ট, ২০২৪

বাংলার কথা ডেস্ক

কোটা সংস্কার আন্দোলন ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করেছেন আসিফ মাহমুদ সজীব। আন্দোলনে সফলতা পেয়ে এখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে উপদেষ্টা পদ পেয়েছেন। ছেলের এ সাফল্যে প্রতিক্রিয়া জানান আসিফের বাবা বিল্লাল হোসেন।

‘আন্দোলনের প্রথমে বাধা দিয়েছিলাম। যেন বের না হয়। সে আমার কথা শোনেনি। বললাম, এত কষ্ট করে পড়াশোনা করালাম ভালো চাকরি করো, মানুষের মতো মানুষ হও। তুমি আন্দোলনে গিয়ে আমার স্বপ্ন শেষ করিও না। সে আমাকে বলেছিল, দোয়া করতে। কিছু করার ছিল না। আমি প্রতিবেলা নামাজে তার জন্য দোয়া করতাম। তার মা কান্নাকাটি করতো, আল্লাহ যেন তাকে ভালো রাখেন। এখন আল্লাহ তার শ্রম ও সততার পুরস্কার দিয়েছেন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা হয়েছে।’

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার বাবা বিল্লাল হোসেন ছেলেকে নিয়ে তার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন।

বিল্লাল হোসেন বলেন, আসিফ আজ যেমন পাঞ্জাবি, টি-শার্ট পরে বঙ্গভবনে গেছে, সে যেন এমনই সাধারণ থাকে। আমার ছেলের প্রতি আমার বিশ্বাস আছে। তাকে বাংলার ইতিহাস মনে রাখবে, এটা আমার বিশ্বাস আছে। আর আমিও যেন গর্ব করে বলতে পারি আসিফ আমার ছেলে। তার কোনো দুর্নীতি নেই।

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার আকবপুর ইয়াকুব আলী ভূঁইয়া পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আসিফের বাবা।

আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার আকবপুর ইউনিয়নের আকবপুর গ্রামের বিল্লাল হোসেন ও রোকসানা আক্তার দম্পতির দ্বিতীয় সন্তান। বড় বোন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্পন্ন করে স্বামীসহ জাপানে আছেন। তৃতীয় বোন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। আর ছোট বোন রাজধানীর হলিক্রস কলেজে পড়াশোনা করছেন।

জানা গেছে, আসিফ ২০১৩ সালে কুমিল্লার আকবপুর ইয়াকুব আলী ভূঁইয়া পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৮ম শ্রেণি পাশ করেন। পরে ঢাকার তেজগাঁওয়ের নাখালপাড়া এলাকার হোসেন আলী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাশ করেন। পরে চলে যান ঢাকার আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজে। সেখানে উচ্চ মাধ্যমিকের গণ্ডি পার করেন। সব ক্লাসেই ভালো ফল পাওয়া আসিফ প্রথমবারেই সুযোগ পান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাবিজ্ঞান বিভাগে।

শুক্রবার (৯ আগস্ট) সকালে বিল্লাল বলেন, তার এ সফলতার খবরে উপজেলাজুড়ে আনন্দের জোয়ার বইছে। মসজিদে মসজিদে তার জন্য দোয়া ও মিষ্টি বিতরণ করছেন স্থানীয় জনতা। অনেকেই আসছেন তার বাড়িঘর দেখতে।

বাবা বিল্লাল হোসেন আরও বলেন, আসিফ ছোটবেলা থেকে মিশুক ও অধিকার সচেতন। তার নেতৃত্ব দেওয়ার আলাদা গুণ লক্ষ্য করেছি। সে যেখানেই গেছে নেতৃত্ব দিয়েছে। কিন্তু কখনও কোনো দলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল না। আমার কড়া নির্দেশনা ছিল যেন রাজনীতিতে না জড়িত হয়। কারণ আমার দাদা ছিলেন এলাকার বিত্তশালী। ১০০ কানি সম্পত্তির মালিক ছিলেন তিনি। এরপর আমার বাবাসহ তার ভাইয়েরা ৮৫ কানি সম্পত্তি পায়। আমার এখন ৩০ কানি সম্পত্তি আর ঢাকার মাতুয়াইলে ফ্ল্যাট আছে। আমাদের টাকা-পয়সার দরকার নেই। তাই বলেছি রাজনীতি আমাদের দরকার নেই।

তিনি বলেন, ছেলেকে সৎ ও যোগ্য করে গড়ে তোলার চেষ্টা করেছি। কখনই দুর্নীতির শিক্ষা দেইনি। আমরা আজ গাড়ি ভাড়া করে এসেছি। আমি চাই, আমার ছেলেও যখন উপদেষ্টা থাকবে না, তখন যেন গর্ব করে বলতে পারে, ‘আমি দুর্নীতি করিনি’।

সূত্র: যুগান্তর

 

বাংলার কথা/আগস্ট ০৯, ২০২৪


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরিতে আরো নিউজ